December 22, 2024, 1:52 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
ছাত্রীকে ধর্ষণ করার দায়ে মঙ্গলবার (নভেম্বর ১৭) কুষ্টিয়ার একটি আদালত এক কওমি মাদ্রাসা শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে। একই সাথে আদালত দোষী ব্যক্তিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে তা ক্ষতিগ্রস্তকে প্রদানের জন্য আদেশ দিয়েছে।
দন্ডিত কওমী শিক্ষক হলেন আব্দুল কাদের। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ সিরাজুল ইসলাম দারুল উলূম মরিয়ম নেছা মহিলা মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট। এটি ছিল আবাসিক মাদ্রাসা।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, আবদুল কাদের তার আগে ঐ মেয়েটিকে নানাভাবে প্রেষিত করে আসছিল তার সাথে শারিরীক সর্ম্পক স্থাপনের জন্য। এক পর্যায়ে ৪ অক্টোবর সকাল আটটার দিকে ঐ ছাত্রীকে কাদের তার তার অফিস কক্ষে ডেকে নেন। সেখানে তাকে ধর্ষণ করেন। শিক্ষক কাদের ঐ একই রাতে মেয়েটিকে আবারও তার রুমে ডেকে নিয়ে দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করেন এবং বিষয়টি প্রকাশ না করার হুমকি দেন।
কিন্তু মেয়েটি তার এক বান্ধবীকে ৫ অক্টোবর ঘটনা সম্পর্কে জানায় যখন একপর্যায়ে তার পেটে ব্যথা অনুভূত হয়।
মেয়েটির পরিবার বিষয়টি জানার পর তার আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের জানান। এরপরে ¯’ানীয় লোকজন ও স্বজনরা মাদ্রাসায় হাজির হন মাদ্রাসাটিতে ভাঙচুর চালান ঐ দিন সন্ধ্যায়।
ভুক্তভোগীর বাবা ঐ রাতেই ওই শিক্ষককে অভিযুক্ত করে মিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জনতার হামলার পরেই ওই শিক্ষক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান, কিন্তু পুলিশ তাকে একই রাত সাড়ে ৯ টার দিকে পোড়াদহের একটি গোপন জয়গা থেকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ ধর্ষক শিক্ষককে ৬ অক্টোবর আদালতে হাজির করার পর কুষ্টিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করে।
৭ অক্টোবর কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগীর মেডিকেল টেস্টের পরে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়। অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক ১৪৪ ধারায় ধর্ষণের কথা আদালতে স্বীকারও করে।
পুলিশ ১৩ ই অক্টোবর চার্জশিট দাখিল করে। আদালত ১২ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করেন।
মামলায় মোট ১৩ জন সাক্ষী ছিলেন, তারা সকলেই মাদ্রাসার ছাত্রী ছিলেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মুন্সী মশিয়ার রহমান কাদেরকে দোষী সাব্যস্ত কওর তার উপস্থিতিতে রায় দেন।
আইনজীবি এবং সাধারণ মানুষ এত স্বল্প সময়ের মধ্যে এই রায়কে স্বাগত জানান।
ভিকটিমের পরিবারের একজন সদস্য রায়ের জন্য সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
কুষ্টিয়া জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অনুপ নন্দী এই রায়কে মাইলফলক বলে অভিহিত করেন।
Leave a Reply